۲۵ آبان ۱۴۰۳ |۱۳ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 15, 2024
আল্লাহর গজবে ধ্বংসপ্রাপ্ত পূর্ববর্তী জাতিসমূহ এবং পবিত্র মদীনা , খায়বর ও হিজাযে ইহুদীদের ঐতিহাসিক স্থান
সৌদি আরবের ওয়াহহাবী রাজতান্ত্রিক সরকার

হাওজা / সৌদি আরবের ওয়াহহাবী রাজতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ এক শো বছর ধরে মহান আল্লাহর গজবে ধ্বংসপ্রাপ্ত পূর্ববর্তী জাতিসমূহ এবং পবিত্র মদীনা , খায়বর ও হিজাযে ইহুদীদের ঐতিহাসিক স্থান , নিদর্শন ও দুর্গ সমূহ সংরক্ষণ করে আসছে !

ওয়াহাবী সৌদি রাজতান্ত্রিক সরকার কর্তৃক মহানবী (সা) , আহলুল বাইত (আ) , সাহাবা ( রা : ) , তাবিঈন ( রা: ) এবং মুসলিম আলিম ও মনীষীদের ( রহ: ) অর্থাৎ ইসলামের সাথে সংশ্লিষ্ট ঐতিহাসিক নিদর্শন ও স্মৃতিচিহ্ন সমূহের ধ্বংস সাধন এবং ইসলাম পূর্ব পৌত্তলিক ( কাফির - মুশরিক যেমন : মাদায়িন -ই সালেহ বা মহান আল্লাহর গজবে ধ্বংস প্রাপ্ত জাতির নগর ও জনপদ সমূহের ধ্বংসাবশেষ ) ও বিধর্মী যেমন ইয়াহুদীদের ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শনাদির ধ্বংসাবশেষ অতি যত্নের সাথে সংরক্ষণ !!

সৌদি আরবের ওয়াহহাবী রাজতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ এক শো বছর ধরে মহান আল্লাহর গজবে ধ্বংসপ্রাপ্ত পূর্ববর্তী জাতিসমূহ এবং পবিত্র মদীনা , খায়বর ও হিজাযে ইহুদীদের ঐতিহাসিক স্থান , নিদর্শন ও দুর্গ সমূহ সংরক্ষণ করে আসছে ! যেমন : মাদাইন -ই সালেহ ( হযরত সালিহের- আ - গযব প্রাপ্ত জাতির শহর ও জনপদ সমূহের ধ্বংসাবশেষ )

In 2008 , UNESCO proclaimed Mada'in Salih as a site of patrimony, becoming Saudi Arabia's first World Heritage Site.[15] It was chosen for its well-preserved remains from late antiquity, especially the 131 monumental rock-cut tombs, with their elaborately ornamented façades, of the Nabataean Kingdom.[16]

২০০৮ সালে ইউনেস্কো মাদাইন -ই সালিহকে [ মহান আল্লাহর গজবে ধ্বংস প্রাপ্ত কওম - ই সালেহের শহর ও জনপদ সমূহ ] পূর্ব পুরুষদের অর্থাৎ প্রাচীন যুগ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ঐতিহাসিক জাতীয় ঐতিহ্যের চিহ্ন ও নিদর্শন স্থল (a site of patrimony) হিসাবে ঘোষণা করে এবং তা এভাবে সৌদি আরবের ১ম বিশ্ব ঐতিহ্য স্থল বলে গণ্য হয়েছে । মাদায়িন -ই সালিহকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থল বলে মনোনীত করার কারণ হচ্ছে যে প্রয়াত পূর্ব পুরুষদের সময় ( সুদূর প্রাচীন কাল ) থেকে ( আজ পর্যন্ত ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী ) এ সাইট বা স্থানটির অবশিষ্টাংশ সমূহ বেশ ভালোভাবেই সংরক্ষিত হয়েছে বিশেষ করে প্রাচীন নাবাতীয় রাজ্যে প্রচলিত অট্টালিকার বিস্তারিত ভাবে অলংকৃত সদর সম্মুখভাগ সহ পাথর কেটে নির্মিত বিস্ময়কর ও আকর্ষণীয়

১৩১ টি সমাধি (যেগুলো এই সাইট বা স্থলে বিদ্যমান )

দেখুন:

Hegra (Mada'in Salih) - Wikipedia

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Hegra_(Mada'in_Salih

পবিত্র মদীনা ও খাঈবারে ইহুদীদের দুর্গ এবং মাদাইন-ই সালিহে বিধর্মী মুশরিকদের ১৩১ টি সমাধি ওয়াহহাবী সৌদি রাজতান্ত্রিক সরকার কর্তৃক সুসংরক্ষিত হচ্ছে অথচ পবিত্র মক্কা , মদীনা , তায়েফ, জিদ্দাএবং হিজায অঞ্চলে মহানবীর ( সা ) যুগ , তাঁর আহলুল বাইত ( আ ) , সাহাবা ( রা : ) , তাবেয়ীন ( রা : ) এবং মুসলিম মনীষী ও আলেমদের ( রহ : ) স্মৃতি চিহ্ন ও ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং তাদের মাযার সমূহ যেমন : জান্নাতুল বাকী , জান্নাতুল মুআল্লাহ , উহুদের শহীদদের সমাধি ও মাযার সমূহ , পবিত্র মদীনা নগরীর ঐতিহাসিক বনী হাশিম মহল্লা এবং সেখানে ইমাম যাইনুল আবেদীন ( আ ) ও ইমাম জাফর সাদিকের (আ ) বাসগৃহ এবং পবিত্র মক্কায় মহানবী (সা) যে গৃহে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন সেগুলো সংরক্ষণ করে নি ওয়াহহাবী সৌদী প্রশাসন বরং সেগুলো সব শিরক , বিদআত ও কবর পূজা অথবা নগর উন্নয়নের নামে ও বাহানায় ভেঙে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অথচ ইহুদীদের এবং প্রগৈসলামিক আদ - সামূদ জাতির ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শন সমূহ ( মাদাইন - ই সালিহ ) জাতীয় ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে সৌদী রাজতান্ত্রিক সরকার ঠিকই সংরক্ষণ করছে ! এর অর্থ কী ?

এ ভাবে ইসলামের সূতীকাগার হিজায বিশেষ করে পবিত্র মক্কা ও মদীনা নগরীকে মহানবী (সা) ও ইসলামের আদি মৌলিক ধর্মীয় স্মৃতি চিহ্ন ও ঐতিহাসিক নিদর্শন মুক্ত করে কেবল ইহুদী ও প্রাগৈসলামিক জাতি সমূহের পুরাকীর্তি, সমাধি , প্রাচীন দুর্গ , স্মৃতিচিহ্ন ও নিদর্শন সমূহ টিকিয়ে রেখে ও সেগুলো ভালোভাবে সংরক্ষণ করে ওয়াহহাবী মতাবলম্বী সৌদি রাজবংশ ও প্রশাসন অদূর ভবিষ্যতে হিজায, পবিত্র মক্কা ও মদীনাকে ইহুদী অঞ্চল বলে যায়নবাদী ইহুদী ইসরাইলের দাবি ও আধিপত্যের পথই আসলে উন্মুক্ত ও সুগম করে দিয়েছে। ঐতিহাসিক ভাবে ইসরাইল দাবি করে বসতে পারে যে এ অঞ্চলের মালিকানা ইহুদী ইসরাইলীয়দের মুসলমানদের নয় । কারণ ইসলাম , হযরত মুহাম্মদ ( সা ) এবং তাঁর আহলুল বাইত ( আ ) , স্ত্রী , পুত্র , কন্যা , সাহাবা ও তাবেয়ীদের ( রা : ) কোন পূণ্য স্মৃতি চিহ্ন ও নিদর্শন যেমন : বাসগৃহ ও সমাধিসৌধ সমূহ পবিত্র মক্কা ও মদীনায় আর বিদ্যমান নেই। যে সব ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শন বিদ্যমান ও টিকে আছে বিশেষ করে ইয়াসরিব (মদীনা) ও খায়বর‌ অঞ্চলে সেগুলো আসলে ইহুদীদের ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শন। অতএব ইসরাইলীরা ভবিষ্যতে দাবি করে বসতে পারে যে " এ সব অঞ্চলে ইসলাম ও মুসলমানদের কোনো মৌলিক ঐতিহাসিক ও সত্যিকার দাবি ও বৈধ ন্যায্য অধিকার নেই । আর এ কারণেই তারা ( মুসলমানরা ) উড়ে এসে জুড়ে বসা গোষ্ঠী যারা অন্যায়ভাবে এ অঞ্চলের আদিবাসী ইহুদীদেরকে এ অঞ্চল থেকে বলপূর্বক বহিষ্কার ও তাদের স্মৃতিচিহ্ন ও নিদর্শন সমূহ মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেও সফল হয় নি ; বরং এখনও সেখানে ইহুদীদের ঐতিহাসিক স্মৃতি চিহ্ন ও নিদর্শন টিকে আছে ও সেগুলো বেশ ভালোভাবে সংরক্ষিত হচ্ছে। অথচ উড়ে এসে জুড়ে বসা মুসলমানদের ধর্ম অর্থাৎ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্মৃতি চিহ্ন ও নিদর্শনই বিদ্যমান নেই। এখন সময় এসেছে আরবদের হাত থেকে ফিলিস্তীন উদ্ধারের মতো হিজাযে নির্যাতিত অত্যাচারিত ও বিতাড়িত ইহুদীদের হৃত অঞ্চল সমূহ পুনরুদ্ধার করার ! " এই ইহুদীরা পরবর্তী ধাপে মহানবী (সা) , তাঁর পবিত্র আহলুল বাইত ( আ ) বিশেষ করে খাইবর বিজয়ী বীর শেরে খোদা হযরত আলী (আ) এবং তাঁর ( সা ) পিতৃপুরুষ হযরত ইসমাইলকে ( আ ) ভণ্ড ( নাঊযুবিল্লাহ ) বলে অভিহিত করে আরো জোরে শোরে প্রচার চালাবে এবং বিশেষ করে অনভিজ্ঞ ও ইসলামের সাথে কম পরিচিত তরল মতির মুসলমান যুবক যুবতীদেরকে বিচ্যুত , বিভ্রান্ত ও গোমরাহ করবে। স্মর্তব্য যে , ইহুদীরা হযরত ইসমাইলকে ( আ ) নবী বলেই স্বীকার করে না এবং তাঁকে ও তাঁর বংশধর আদনানী আরবদেরকে ( যাদের মধ্যে কুরাইশ গোত্র , কাইস গোত্র এবং বনী হাশিমও রয়েছেন ) অসভ্য , মূর্খ , বন্য ও বর্বর বলে বিবেচনা করে ।

বিংশ শতাব্দীর সূচনা লগ্নে ওয়াহহাবী মতাবলম্বী সৌদি শাসক আব্দুল আযীয ইবনে সৌদ ইসলাম ও মানবতার দুশমন সাম্রাজ্যবাদী বিধর্মী খ্রিষ্টান ব্রিটেনের সামরিক ও আর্থিক সাহায্য ও সহযোগিতা নিয়ে প্রথমে নজদ অঞ্চল অধিকার এবং এর ধারাবাহিকতায় সমগ্র জাযীরাতুল আরব ( আরব উপদ্বীপ ) ও হিজায অঞ্চল দখল করে পবিত্র মক্কা ও মদীনায় বিদ্যমান ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ঐতিহাসিক নিদর্শন গোরস্থান জান্নাতুল মুআল্লা ও জান্নাতুল বাকীতে মহানবীর ( সা ) আহলুল বাইতের (আ) ৪ ইমাম : ইমাম হাসান ( আ ) , ইমাম যাইনুল আবেদীন ( আ ) , ইমাম মুহাম্মাদ আল - বাক্বির ( আ ) এবং ইমাম জাফার সাদিক (আ) ,মহানবীর ( সা ) পিতৃব্য আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ( রা : ) , নবীপুত্র ইব্রাহীম ( আ ) , উম্মুল মুমিনীনগণ ( আ ) , সাহাবা ( রা: ) , তাবেয়ীন ( রা: ) , আলেম - উলামার ( রহ ) কবর , মাযার, স্মৃতি সৌধ সব কিছু ১৩৪৪ হিজরি সালের ৮ শাওয়ালে ধ্বংস করে দেয় শিরক , বিদ'আত ও কবর পূজার বাহানায়। ইহুদী যায়নবাদীদের দোসর ও পৃষ্ঠপোষক বিধর্মী খ্রিষ্টান সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেনের সার্বিক সাহায্য ও পৃষ্ঠপোষকতা পুষ্ট ওয়াহহাবী সালাফী সৌদি রাজতান্ত্রিক সরকার কর্তৃক ইসলামের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শায়ীরাহ্ ( নিদর্শন ) জান্নাতুল বাকী গোরস্থানস্থ মহানবীর (সা) আহলুল বাইতের ( আ ) চার ইমাম ( আ ) , সাহাবা ( রা : ) ও তাবেয়ীন ( রা : ) এবং মুসলিম মনীষী ও আলেমদের সমাধি সৌধ ( মাযার - মারকাদ ) সমূহ ধ্বংস এবং ইহুদীদের দুর্গ খায়বর ও মাদায়িন - ই সালিহের মতো বিলুপ্ত কাফির মুশরিক জাতির ধ্বংস প্রাপ্ত নগর , জনপদের ধ্বংসাবশেষ ও সমাধি সৌধ সমূহ সুসংরক্ষণ করা থেকে কি প্রতীয়মান হয় না যে ওয়াহহাবী সৌদি রাজতান্ত্রিক প্রশাসন ইসলাম বিলুপ্ত করার লক্ষ্যে প্রণোদিত ইহুদী যায়নবাদী চক্র ও বিধর্মী খ্রিষ্টান সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেনের এক ভয়ানক সর্বনাশা যৌথ নীল নক্সা ও পরিকল্পনা যা হচ্ছে পবিত্র মক্কা , মদীনা ও হিজাযে ইসলাম , মহানবী ( সা ) , তাঁর আহলুল বাইত ( আ) , তাঁর স্ত্রী উম্মুল মুমিনীনগণ , তাঁর সাহাবা ও তাবেয়ীদের সমাধি সৌধ এবং সুপ্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহের ধ্বংস সাধন করে তা সুচারুভাবে বাস্তবায়ন করেছে হয় শিরক , বিদ'আত ও কবর পূজার মিথ্যা বাহানায় অথবা তথাকথিত নগর ও শহর উন্নয়ন , সম্প্রসারণ এবং আধুনিকীকরণের ( আধুনিকায়ন ) দোহাই দিয়ে ; পবিত্র মক্কা ও মদীনায় ইসলামের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীনতম ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শন ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে যেগুলোর ধর্মীয় গুরুত্বের পাশাপাশি অপরিসীম ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বও রয়েছে । যেমন : মহানবী (সা) পবিত্র মক্কায় যে গৃহে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন তা ভেঙে সেখানে কিতাবখানা ( লাইব্রেরী ) নির্মাণ করা হয়েছে এবং মদীনায় মসজিদে নববী ও জান্নাতুল বাকী গোরস্থানের মাঝে অবস্থিত ১৪ শতাব্দীর সুপ্রাচীন বনী হাশিম মহল্লা যেখানে ইমাম যাইনুল আবেদীন ( আ ) এবং ইমাম জাফার সাদিকের ( আ ) বাসগৃহ ছিল তা ( বনী হাশিম মহল্লা) মদীনা শহরের উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণের ধূঁয়ো তুলে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে । ইসলামের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক স্থান , মহল্লা , ভবন , চিহ্ন ও নিদর্শন সমূহ সমূলে ধ্বংস করে নগর উন্নয়ন , সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের কী কোনো গুরুত্ব ও ফায়দা আছে ? হ্যাঁ যদি ফায়দা থেকে থাকে তা নি: সন্দেহে মুসলমানদের না হয়ে তা হবে বিধর্মী ইহুদী , খ্রিষ্টান ও ধর্মের শত্রুদের ফায়দা । কারণ ইসলাম ও মুসলমানদের দুশমন এ সব ইহুদী , নাসারা ও বিধর্মীরা বলবে যে ইসলামের কোনো খাঁটি ধর্মীয় ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক মৌলিকত্ব নেই । যদি থাকত তাহলে এ ধর্ম এবং এ ধর্মের প্রবর্তকের ( সা ) , তাঁর

আহলুল বাইতের ( আ ) , তাঁর সাহাবাদের ( রা :) এবং মুসলমানদের প্রাচীনতম ধর্মীয় ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শন অবশ্যই বজায় ও বিদ্যমান থাকত এ ধর্মেরই সূতিকাগার পবিত্র মক্কা ও মদীনায়। কিন্তু সেগুলো বিদ্যমান নেই। আর ধর্ম বিরোধী নাস্তিক্যবাদীরাও এ থেকে দাবী করতে পারবে যে হিন্দু , বৌদ্ধ , খ্রিষ্টান , জৈন , তাও ও শিন্তো ধর্মের মতো ইসলামও হচ্ছে এক ধরনের কাল্পনিক ঔপাখ্যানিক ( মিথলোজিক্যাল ) ধর্ম । কারণ এ ধর্মের এবং এর প্রবর্তকের পর্যাপ্ত ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শন বিদ্যমান নেই !!! আসলে বিধর্মী সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ওয়াহহাবী সালাফী সৌদি রাজতান্ত্রিক সরকার মহান আল্লাহর দ্বীনের এক অন্যতম নিদর্শন জান্নাতুল বাকী গোরস্থানের সমাধি ও মাযার সমূহ ধ্বংস করে উম্মতে মুসলিমার সত্যি অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করেছে। শিয়া - সুন্নী নির্বিশেষে যে জান্নাতুল বাকী সমগ্র মুসলিম উম্মাহর মিলনস্থল ও ঐক্যের প্রতীক তা অজ্ঞতা , মূর্খতা কূপমন্ডুকতা , নির্বুদ্ধিতা ও ধর্মীয় গোঁড়ামির জন্য হিংস্র , বর্বর , অসভ্য , দস্যু - তস্কর , লুটেরা শয়তানের শিং তুল্য মরুচারী বেদুইন ওয়াহহাবী সালাফী নজদী সৌদিদের হাতে ধ্বংস হয়েছে আজ থেকে শতবর্ষ আগে ১৩৪৪ হিজরীর ৮ শাওয়ালে। হাদীসে এই নজদ ( نجد ) ও দিরিয়া ( درعیة ) অঞ্চল শয়তানের শিং এর উদয় ও ফিৎনার উৎসস্থল বলেছেন স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা) এবং তিনি শাম ও ইয়ামানের জন্য দুআ ও আশীর্বাদ করেছেন কিন্তু নজদবাসীদের জন্য দুআ ও আশীর্বাদ করেন নি বরং নজদকে তিনি ( সা ) ভূমিকম্প, ফিতনা ও শয়তানের শিং এর উদয় স্থল বলেই উল্লেখ করেছেন। যেমন নিম্নোক্ত এ হাদীসটি :

ইবনে উমর ( রা ) বলেছেন : মহানবী ( সা ) স্মরণ করে বললেন ( এবং দুআ ও আশীর্বাদ করলেন ) : " হে আল্লাহ ! আমাদের জন্য শামে বরকত দিন ; হে আল্লাহ ! আমাদের জন্য ইয়ামানে বরকত দিন। " তখন বলা হল ( সেখানে উপস্থিত লোকেরা বলল ) : " হে রাসূলাল্লাহ ! এবং আমাদের নজদেও ? " তিনি ( সা ) বললেন : " হে আল্লাহ ! আমাদের শামে বরকত দিন ; হে আল্লাহ ! আমাদের ইয়ামানে বরকত দিন। " তখন ( আবারও তাঁকে) বলা হল ( উপস্থিত লোকেরা) বলল : " হে রাসূলাল্লাহ ! এবং আমাদের নজদেও ? "

অত:পর আমি ( রাবী ইবনে উমর ) ধারণা করছি যে তিনি ( সা ) তৃতীয় বারে বললেন : " সেখানেই তো রয়েছে ভূমিকম্প ও ফিতনা সমূহ এবং সেখানেই ( তথায় ) উদিত হয় ( হবে ) শয়তানের শিং। "

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قال : ذَکَرَ النَّبِيُّ (ص) : « اَللّٰهُمَّ بَارِکْ لَنَا فِيْ شَامِنَا ، اَللّٰهُمَّ بَارِکْ لَنَا فِيْ یَمَنِنَا .» قَالُوْا : « یَا رَسُوْلَ اللّٰهِ ! وَ فِيْ نَجْدِنَا ؟ » قَالَ : : « اَللّٰهُمَّ بَارِکْ لَنَا فِيْ شَامِنَا ، اَللّٰهُمَّ بَارِکْ لَنَا فِيْ یَمَنِنَا .» قَالُوْا : « یَا رَسُوْلَ اللّٰهِ ! وَ فِيْ نَجْدِنَا ؟ » فَأَظُنُّهُ قَالَ : فِي الثَّالِثَةِ : « هُنَاکَ الزَّلَازِلُ وَ الْفِتَنُ ، وَ بِهَا یَطْلَعُ قَرْنُ الشَّیْطَانِ .»

[ দ্রঃ সহীহুল বুখারী , কিতাবুল ফিতান , হাদীস নং ৭০৯৪ , পৃ : ১৭৮২ , এবং কিতাবুল ইস্তিস্কা , হাদীস নং ১০৩৭ , পৃ : ২৪৪ ,দারুল ফিকর , প্রথম সংস্করণ , ( ১৪২৮ - ১৪২৯ হি ) , বৈরূত , লেবানন ; সহীহুল বুখারী সংক্রান্ত গবেষণা ও পাদটীকা সংযোজন : মুহাম্মাদ সিদকী আল - আত্তার ]

জান্নাতুল বাকী ও এর সমাধিসৌধ ও মাযার সমূহ নি: সন্দেহে মহান আল্লাহর দ্বীনের নিদর্শনাদির অন্তর্ভুক্ত যা তা'যীম ( ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সম্মান ) করা অন্তরের তাকওয়া সঞ্জাত । পবিত্র কুরআনে এরশাদ হচ্ছে :

وَ مَنْ یُعَظِّمْ شَعَایِرَ اللّٰہِ فَإِنَّہَا مِنْ تَقْوَی الْقُلُوْبِ ۔

যারা মহান আল্লাহর দ্বীনের নিদর্শনাদির সম্মান ( তাযীম) করে তা [ সেগুলোর ( নিদর্শনাদি ) প্রতি সম্মান প্রদর্শন বা তাযীমুশ শা'আয়ির ] হবে তাদের হৃদয়ের তাকওয়া সঞ্জাত । ( সূরা -ই হজ্জ : ৩২ )

তাই বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে ওয়াহাবী সালাফী তাকফীরী নজদী সৌদী রাজতান্ত্রিক সরকার এ সব স্মৃতি চিহ্ন ও নিদর্শন সমূহ যা হচ্ছে মহান আল্লাহর ধর্মের নিদর্শন ( শাআয়িরুল্লাহ شعائر الله ) সেগুলো ধ্বংস করে দ্বীনের নিদর্শনসমূহের প্রতি চরম অবমাননা , অশ্রদ্ধা , অভক্তি ও বেআদবি করেছে এবং মুসলিম উম্মাহর মাঝে চরম ফিতনা ও বিশৃঙ্খলা বাধিয়েছে যা তাদের অন্তর সমূহ তাকওয়া বিহীন ( তাকওয়া শূন্য ) এবং তাদের চরম ফিৎনাবাজ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কারী হওয়ার প্রমাণ স্বরূপ । তাকওয়া শূন্য হৃদয় মহান আল্লাহকে ভয় করে না বলেই তো ঐ সব তাকওয়া বিহীন অন্তর থেকেই তো ফিৎনা ফাসাদ উদ্গত হচ্ছে ও হতেও থাকবে।

সুতরাং ওয়াহহাবী তাকফীরী মতবাদ বিভ্রান্তিকর ফিতনা ছাড়া আর কিছুই নয় যার গোড়াপত্তনকারী নজদে উদিত শয়তানের শিং মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব নজদী যার পথভ্রষ্ট বাতিল আকিদা ও মতবাদের বিরোধিতা স্বয়ং তার পিতা আব্দুল ওয়াহহাব এবং আপন জ্যৈষ্ঠ ভ্রাতা সুলাইমান ইবনে আব্দিল ওয়াহহাবও করেছিলেন। ( বিস্তারিত জানার জন্য দ্রষ্টব্য : আল- আলাম আল-আল্লামাহ ওয়াল ফকীহ আল - ফাহহামাহ্ আশ - শাইখ সুলাইমান ইবনে আব্দিল ওয়াহহাব ( মৃ : ১২১০ হি ) প্রণীত ফাসলুল খিতাব মিন কিতাবিল্লাহি ওয়া হাদীসির্ রসূল্ ওয়া কালামিল্ উলামা ফী মাযহাবি ইবনে আব্দিল ওয়াহহাব )

সুতরাং সৌদী রাজতান্ত্রিক সরকার ও প্রশাসনের উচিৎ ও প্রধান কর্তব্য হচ্ছে অনতিবিলম্বে জান্নাতুল বাকী ও জান্নাতুল মুআল্লা সহ হিজায ও আরবোদ্বীপের সকল ইসলামী ঐতিহাসিক মাযার , সমাধিসৌধ, চিহ্ন ও নিদর্শনসমূহের পুনঃনির্মাণ এবং তা ধ্বংস সাধনের ( তাখরীব ) আগে যে অবস্থায় ছিল ঠিক সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এমনকি অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলারের উচ্চাভিলাসী ফালতু প্রকৃতি বৈরী অপচয় মূলক নিওম প্রোজেক্টের কাজ বাদ দিয়ে বা স্থগিত করেও !!! আর এটা না করলে সৌদী কর্তৃপক্ষ মুসরিফ ( مُسْرِفٌ অপচয়কারী পাপী যালেম ) বলেই গণ্য হবে। তাই তাদের এ দুর্নাম ঘোচানোর একটাই পথ অবশিষ্ট ও বিদ্যমান আছে । আর তা হচ্ছে জান্নাতুল বাকী, জান্নাতুল মুআল্লা সহ ইসলামের সকল আদি মৌলিক চিহ্ন ও নিদর্শনাদির পুনঃনির্মাণ এবং এ সকল পবিত্র স্থানের যিয়ারত ও নিদর্শন সমূহের তা'যীম করার ক্ষেত্রে মুসলমানদেরকে বাধা না দেওয়া ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করা অর্থাৎ তাঁদের ওপর সংকীর্ণ চরমপন্থী ওয়াহহাবী তাকফীরী মতবাদ চাপিয়ে না দেওয়া। তা'যীম ( تعظیم ) নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন যা এ সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধের ক্ষুদ্র পরিসরে সম্ভব নয় ।

লেখা: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

تبصرہ ارسال

You are replying to: .